Saturday, February 14, 2015

গল্প নয় বাস্তব সত্য -06

গল্প নয় বাস্তব সত্য -06 ================ ঠিক আছে বলে উকিলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মেসের দিকে রওয়ানা হলো ভাই ৷ পকেটে অবস্থা নাজুক ৷ রিক্সা ভাড়াটা হবে হয়তো ৷ দুপুরের খাবার এখনো খাওয়া হয়নি ৷ মেসে ফিরে দেখে খাবার আছে খেয়ে নিল কয়েক লোকমা বাকীটা যোগ হল এঁটোর তালিকায় ৷ এটা আজ ক'দিনের কমন ব্যপারে পরিনত হয়েছে ৷ খাবার শেষে দোকানে গেল রিচার্জ করতে হবে ৷ মনে হল পকেটতো খালি ৷ ফিরে এসে পরিচিত বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শ'পাঁচেক টাকা নিলো ৷ মোবাইলে রিচার্জ করলো দুশ টাকা ৷ মেসে ফিরে এসে কোথায় ফোন দেওয়া যায় ভাবছে ৷ কাকে ফোন দিলেইবা টাকা পাওয়া যাবে সবারই তো আর্থিক অবস্থা খারাপ ৷ তবুও টাকাতো জোগাড় করতেই হবে কোর্টে গেলেইতো টাকা দরকার ৷ মনে হয় কোর্টের ইটও হা করে থাকে টাকার জন্য ৷ টাকা ছাড়া সেখানে কিছুই হয়না ৷ তার ওপর রিমান্ডতো যে কোন মূল্যেই বাতিল করতে হবে ৷ যত টাকাই লাগুকনা কেন ৷ প্রয়োজনে রক্ত বিক্রি করতে হবে তবুও ছোটর রিমান্ড হতে দেওয়া যাবেনা ৷ রিমান্ড আসলে কি ? কি করে রিমান্ডে ? তার স্বচ্ছ কোন ধারনা নাই ভাইয়ের ৷ তবে খবরে, সোস্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে ৷ ইদানিং বিরুধীদের ধরলেই রিমান্ড আর রিমান্ড মানেই হাড় গোর ভেঙ্গে একাকার ৷ পুলিশ ছোটর সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে ৷ যদি একদিনও রিমান্ড মঞ্জুর করে তাহলে কি হবে ৷ বাবা মা খবর পেলে হয়তো, ,,,,,,,,, না এ হতে পারেনা ৷ শুরু হল চারিদিকে ফোন ৷ বিপদে বন্ধুর পরিচয় দিতে অনেকেই ব্যর্থ কিন্তু এক বন্ধু বললো টেনশান করিসনা বিশ, পঞ্চাশ যা কাল এসে নিয়ে যাস ৷ কৃতজ্ঞতার সুরে ভাই বললো দোস্ত আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম বাচালি তুই ৷ দোস্ত বলে কি বলিস এটা কোন কথা, এতটুকু যদি তোর বিপদে করতে না পারি তাহলে আমরা কিসের দোস্ত ৷ দু এক বছর আগে হলেতো লাখ টাকার জন্যও তোর কাউকে ফোন দিতে হতোনা তুই খুব ভালরে দোস্ত ৷ জীবনে অনেকের জন্য অনেক করেছিস ৷ আজ অনেকেই তোর বিপদে পাশে দ্বাডাকে পারেনি আমিযে পেরেছি সেটাতো আমার সৌভাগ্য ৷ ভাই বললো দোস্ত সেটা এখন গল্প বাদ দে ওসব ৷ আর দোস্ত আমি কাল নয় পরশু আসবো ৷ কাল ছোটকে দেখতে যেতে হবে ৷ দোস্ত বললো ঠিক আছে যখন সময় হয় আসিস ৷ ওকে দোস্ত ৷ ভালো থাক ৷ সোমবার সকাল গ্রামের বাড়ি থেকে চাচাতো, জেঠাতো আর মেজো এলো ৷ সবাই জেলগেটে ৷ ভাইয়ের কাছে টাকা নেই কিন্তু ওদের কাছে আছে ৷ তাই আজ আর ভাবতে হলোনা ভাইকে ৷ ছোটর সাথে সাক্ষাতের সময় হলো সবাই ভিতরে কিন্তু ছোটর আসার খবর নাই ৷ তাই আবার ভেতরের কাগজ কলম ওয়ালা একজনকে ইশারা করে ডাকলো আমার ভাইকে একটু ডেকে আনবেন? নাম, বাপের নাম , থানার নাম কন ৷ টাকা লাগবে কিন্তু তিনশো পেছন থেকে চাচাতো এসে বললো পঞ্চাশ দেবো নিয়ে আসেন ৷ না হবে না দুশত দিতে হবে ৷ অবশেষে একশততে ডিল ফাইনাল ৷ লোকটি চলে গেল ৷ কিছু সময় পর ছোটকে সাথে নিয়ে আসলো লোকটা ৷ এইযে ভাই আপনার ভাইরে আনছি টাকাটা দেন ৷ একশত টাকা বের করে দিল চাচাতো ৷ চারজন সাক্ষাৎ প্রার্থী ছোটর সাথে একের পর এক একটু আধটু কথা বলে নিচ্ছে ৷ এরই মধ্যে একটা লোক ভেতর থেকে ছোটকে টেনে সরিয়ে দিচ্ছে ৷ বলছে সাক্ষাৎ টাইম শেষ আরও কথা বলতে হলে দুশত টাকা দেন ৷ তারমানে তিনশত পাক্কা ৷ এবার মেজো দুশত দিলো ৷ সবাই আরো কিছুক্ষণ কথা বলে বিদায় জানালো ছোটকে ৷চলচে........

No comments:

Post a Comment