Saturday, February 14, 2015

সেদিন কেঁদেছিলাম খুব-02

সুজনের বন্ধুদের মধ্যে একজন আছে ওর ভাতিজা নাম তুষার ৷ ও সুজনের অনেক বেশী ঘনিষ্ঠ ৷ যদিও জুনিয়র তবুও সব সময় একসাথে চলাফেরা ৷ ওর মাধ্যমেই সুজনের জুনিয়রদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল ৷ তো তুষার একবার ঢাকায় এলো সুজনের কাছে ৷ ও প্রায়ই আসে কিন্তু সে বারেই ঘটেছিল এ গল্পের মুল ঘটনা ৷ সুজন আর তুষার বসে বসে গল্প সল্প করছিল ৷ এ সময় তুষারের ফোনে একটি মিসডকল আসল কলব্যাক করে তুষার কথা বললো ৷ দুজন দুজনাকে আপনি করে বলছে ৷ তবে ফোনের ওপাশের কন্ঠটা মেয়েলি কন্ঠ ৷ খুব মিষ্টি মেয়েটির কন্ঠ ৷ কয়েক মিনিট কথা বলে ফোন রাখলো তুষার ৷ সুজন তুষারকে জিজ্ঞেস করলো কেরে মেয়েটা পাইলি কই ৷ সে বছর তুষারের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা ছিল সপ্তাহ খানেক আগেই পরীক্ষা শেষ হয়েছিল ৷ তুষার জানালো মেয়েটা তার সাথে পরীক্ষার সময় পরিচয় হয়েছিল এখন ওরা ভাল বন্ধু ৷ দেখ তোর বন্ধু না জি এফ সত্যি করে বল নইলে মারুম কিন্তু ৷ কসম চাচা ভাল বন্ধু ছাড়া আর কিছুই না , তবে কোনদিন হয়তো gf হইয়া গেলেও যেতে পারে ৷ সুজন বললো মেয়েটা কেমনরে বাপ ৷ তুষার উত্তর দিলো হাইট আপনার চেয়ে একসুতাও কম হবে না ৷ গায়ের রং আপনার মতই কিন্তু চিকনী চামেলী যেছকো ক্যাহতে হ্যায় ৷ চেহারা আকর্ষনীয় ৷ তবুও শুধু প্রেম করা যাবে বিয়ে করার মত নই ৷ তুষারের ব্যপক পরিবর্তন দেখে অবাক সুজন ৷ ছেলে বলে কি? প্রেম করার মত মেয়ে কিন্তু বিয়ে করার মত নয় ৷ যদি বিয়ে করার মত নাই হয় তাহলে কেনইবা প্রেম করার মত হবে? বিয়ে না করার চিন্তা করে প্রেম তার মানেই ঠকবাজি ৷ তুষার বললো আজকাল মেয়েরাও এমনই কারো সাথে প্রেম করে যাষ্ট ফর টাইমপাস ৷ তার চেয়ে উপযুক্ত পাত্র পেলেই প্রেমিকের পাছায় ফ্রি কিক ৷ এই হলো আজকের অবস্থায় ৷ কিন্তু সুজন মানতে রাজি নয় ৷ সুজন একবার একটা প্রেমে পরেছিল ৷ মেয়েটা ছিল সুজনের রিলেটিভ ৷ বাবা , মা, ভাই, বোন সবাই জানতো বিষয়টা ৷ মেয়েটার সাথে রিলেশন থাকার সময় সুজনকে আরো দু তিনজন মেয়ের ভাল লেগেছিল ৷ ওরা ছিলো সুজনের খালতো বোনের বান্ধবী ৷ বিভিন্ন সময়ে খালাতো বোন বলতো ওমুক আপনার সম্পর্কে একথা সেকথা বলে ৷ আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে ৷ আপনি চাইলে মিলাইয়া দিতে পারি ৷ সুজনের খালাতো বোন ভাল করেই জানতো রিলেটিভ মেয়েটার সাথে সুজনের সম্পর্কের কথা ৷ তারপরও বলতো ৷ ভাই এসব কোন ব্যপারই না আজকাল ছেলে মেয়েরা প্রেম করে একজনের সাথে বিয়ে করে অন্যজনকে এটা কোন ব্যপার না ৷ প্রেম মানে টাইমপাস ৷ জীবনে যার সাথে প্রেম করে তাকে বিয়ে করলে মানুষটা থাকে বাট লাভটা থাকেনা ৷ প্রেম করে বিয়ে না করলে হয়তো মানুষটা থাকেনা কিন্তু লাভটা থেকেই যায় ৷ সুজন এসব মানতে রাজিনা ৷ তুষারের কথা শোনার পর সুজন কিছুক্ষণের জন্য অতীতে ফিরে গিয়েছিল ৷ তখনকার কথা গুলো চিন্তা করে তুষারের সাথে অনেকটাই একমত হলো সুজন ৷ ভাবছে সত্যিই তো তাই নাহয় আজ চার বছর হলো রিলেটিভ মেয়েটার বিয়ে হয়েছে কিন্তু আজও সুজন তাকেই কল্পনা করে স্বপ্ন দেখে ৷ মাঝে মাঝে সুজনের মনে হয় মেয়েটি হয়তো ফিরে এসে সুজনকে বলছে তুমি এত কি ভাবছো এইতো আমি ৷ তোমার সেই আমি আজও তোমারই আছি ৷ তোমারই থাকবো চিরদিন ৷ তুমি কি মনে কর আমি অন্যকারো হয়ে গেছি না না আজও তোমার আমি তোমারি আছি ৷ বাস্তবে সুজন জানেনা মেয়েটা এখনো সুজনকে ফিল করে কিনা ৷ বিয়ের চার বছরে একবারও সুজনের সাথে যোগাযোগ করেনি ৷ হয়তো ভুলে গেছে হয়তো না ৷ সুজন অনেক চেষ্টা করেছিল মেয়েটার সাথে যোগাযোগ করার কিন্তু পারেনি ৷ আবার সেই হারিয়ে যাওয়া প্রেয়সীর সুখের কথা চিন্তা করে কখনো থেমে যেত ৷ ভাবতো আমি যদি যোগাযোগের চেষ্টা করি তাহলে হয়তো আমার জানপাখিটার জীবনকে কালোমেঘ ঢেকে দিতে পারে না ৷ এটা হতে পারেনা ৷ ওকে সুখী দেখলেই আমার সুখ ৷ ওর কোন দুঃখ সুজন দেখতে পারবেনা ৷ হয়তো আমি তাকে এতটা সুখ দিতে পারতামনা ৷ তাই বিধাতা তাকে অন্যখানে নিয়ে গেছে যেখানটায় ও সুখী রবে ৷ তাহলে আমি কেন ওর জীবনে কালো মেঘ হয়ে উদিত হবো ৷ ওর ওপর আমার কোন অধিকার নেই ৷

No comments:

Post a Comment