Monday, February 23, 2015

গিভ এন্ড টেকের দুনিয়া


গিভ এন্ড টেকের দুনিয়ায় সব কিছুই ইনভেস্ট করা যায় ৷ একটু আগে ফুটপাতে হাটছিলাম অসাবধানতা বসত ধাক্কা লেগে গেল এক ভদ্রলোকের সাথে ৷ কাল বিলম্ব না করেই সরি বললাম ৷ তার দশ মিনিটও অতিবাহিত হয়নি ৷ একলোক ধাক্কা খেল আমার সাথে পড়ে গেল হাতে থাকা ডায়রিটা ৷ তিনিও কাল বিলম্ব না করেই বললেন সরি ৷ ইটস ওকে বলে চলে এলাম ৷ গুলশান এক নাম্বার গোল চত্তরের কিছুটা পুর্ব পাশে এসেই দেখি লোকজনের জটলা ৷ দুর থেকে দেখলাম এক সি এন জি ড্রাইভারকে মারলো এক মাইক্রোবাস ড্রাইভার ৷ সাথে সাথেই নিজের ইনভেষ্টমেন্ট ফেরত পেলেন ওই মাইক্রোবাস ড্রাইভার হয়তো সাথে কিছুটা প্রফিটও ৷ তাই বন্ধুগণ সতর্ক পদক্ষেপে চলুন ৷ চিন্তা ভাবনা করে ইনভেস্ট করুন জীবনের সবকিছু ৷ মুখ, হাত, মস্তিস্ক, অর্থ, সময় সবই হতে পারে মহামুল্যবান যদি সতর্কতার সহিত তাহা কাজে লাগাই তাহলে পজেটিভ রেজাল্ট আর অসতর্কতা ডেকে আনবেই নেগেটিভ রেজাল্ট ৷ সো বি কেয়ারফুল ৷

মরেও বেঁচে থাকেন যারা


মরেও বেঁচে থাকেন যারা *************** মরহুম খলিলুর রহমান সাহেব ৷ যিনি ছিলেন এক অসাধারন মানুষ ৷ যিনি ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগর ৷ হাজারো সন্তানের সম্মানিত পিতা ৷ হাজারো সন্তান কেন বললাম হয়তো কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন ৷ তিনি হাজারো ইয়াতিমকে পিতার স্নেহ মাখা আদর ও শাসনে গড়ে গেছেন মানুষ হিসেবে ৷ তিনি একজন জেনারেল শিক্ষিত মানুষ হয়েও গড়ে তুলেছিলেন ঐতিহ্যবাহী একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ৷ তিনি জীবনের সকল সম্পদ ঢেলে সাজিয়েছেন একটি কামিল মাদ্রাসা ৷ তিনি পৈতৃক সুত্রে পাওয়া একরে একর জমি বিক্রি করে ও নিজের সারা জীবনের উপার্জিত অর্থ ব্যয় করে সাজিয়ে তুলেছেন একটি বিশাল এতিমখানা ৷ যার অক্লান্ত পরিশ্রম আর প্রচন্ড আবেগ মিশে আছে তার প্রতিষ্ঠিত কামিল মাদ্রাসা আর এতিমখানার প্রতিটি ইট, বালুতে ৷ আপনি যদি কখনো সেখানটায় যান দেখবেন প্রতিটি বালুকনা আপনাকে ডেকে বলছে মরহুমের কথা ৷ ইট, বালু গুলোও যেন ধন্য তার ছোয়ায় ৷ কত ইট বালুতো বড় বড় রাজপ্রাসাদ নির্মানে কাজে লাগে ৷ কিন্তু যেখানে গর্বের কিছুই থাকেনা ৷ গর্বতো সেখান যেখানে দেওয়া হয় কোরআন আর হাদিসের তালিম ৷ জীবনের সব কিছু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন যারা তাদেরই একজন মরহুম খলিলুর রহমান সাহেব ৷ যার জীবদ্দশায় প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার নামটি মাদ্রাসা বা এতিমখানার কোন নেমফ্লেটে লিখতে পারেনি কেউ ৷ জনাব আপনিতো চলে গেলেন কিন্তু নামটা আজ আমরা লাগিয়ে দিয়েছি ৷ ক্ষিপ্ত হবেননা আমরা আজও আপনাকে ভালবাসি যতদিন বেঁচে থাকি ততদিন বাসবো ৷ যদি ভুল করি তবে ক্ষমা করে দিবেন ৷ আসলে যখন প্রথম আপনার মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছিলাম চিনতে পারিনি আপনাকে ৷ অন্তত ছয়মাসের পর জানতে পারলাম আমাদের মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আপনি ৷ আপনি কেন এতটা সহজ সরল জীবন যাপন করতেন ? আপনার সাজানো বাগানে ভ্রমর হয়ে গিয়েছিলাম মধু সংগ্রহ করতে ৷ জানিনা কতটুকু পেরেছি ৷ তবে একথা বলতে পারি আপনাকে দেখে অন্তত এতটুকু শিখেছি বিনম্র জীবন যাপন মানুষকে মানুষের চোখে বড় করে তোলে ৷ আপনার বিদায়ের পর তিনটি বছরও থাকতে পারলামনা আমরা সার্টিফিকেট দিয়ে বিদায় করে দিয়েছে হুজুররা ৷ যেদিন সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে বাড়ির পথে হেটেছিলাম কেন যেন মনটা বিচ্ছেদে হুহু করে কেঁদে উঠেছিল ৷ আজ আপনি জান্নাতের মেহমান হয়ে পাড়ি জমিয়েছেন ৷ কিন্তু আপনার বাগানের ফুল সুবাস ছডিয়েই চলছে অবিরত ৷ আপনি কি মধু আরোহী মৌমাছির আনাগোনা দেখতে পান? সেদিনের কথা কি করে ভুলে যাবো যেদিন ঝালমুড়ি ওয়ালা কাগজের ঠোঙ্গায় ঝালমুড়ি বিক্রী করছে ৷ আর আপনার আদরের কচি কাচা মৌমাছিরা খেয়ে খেয়ে ঠোঙ্গা ফেলে মাদ্রাসার আঙিনা নষ্ট করছিল ৷ আপনি কাউকে কিছু বলেননি নিজে হাতে সেগুলো পরিস্কার করেছিলেন ৷ ভীষন লজ্জা পেয়ে সেই ঝালমুড়ি ওয়ালা আমাকে ডেকে বলেছিল যদি না খেয়েও থাকি তবুও আর কখনো এখানটায় দারিয়ে দোকান করবোনা ৷ আপনি সবসময় অবনত মস্তকে হাটতেন তাই কি আজ আপনি এতো সন্মানিত ৷ আপনি দোয়া করবেন আমিও যেন বিনয়ী হতে পারি ৷

Monday, February 16, 2015

সেদিন কেঁদেছিলাম খুব -03

সেদিন কেঁদেছিলাম খুব -03 ************-******* বিমর্ষ হয়ে বসে আছে সুজন ৷ তুষার ডেকে বললো কি ব্যপার আংকেল কি ভাবছেন এত ৷ মনে হয় মনটা খুব খারাপ? চমকে উঠলো সুজন ৷ বললো নারে জীবনে মানুষ কত স্বপ্ন দেখে ৷ কত কল্পনা জমিয়ে রাখে ৷ আবেগ দিয়ে তৈরী করে স্বপ্নের তাজমহল ৷ সেখানে প্রেয়সীর ছোঁয়া অনুভব করে সুখ পায় ৷ কিন্তু বাস্তবতা বডই কঠিন ৷ যেখানে কল্পনার কোন স্থান নেই ৷ কল্পনা আর বাস্তবতার মাঝে যোজন যোজন ফারাক ৷ কত স্বপ্নই না ছিল আমার সেই হবে তোর কাকি কিন্তু সে আজ অন্যের ঘরনী ৷ স্বপ্ন দেখেছিলাম আমি ওকে নিয়ে কত ৷ আমার স্বপ্ন সব ভেঙ্গে গেল হৃদয় হয়েছে ক্ষত ৷ তুই জানিস আমি কখনো ওকে কোন অভিশাপ দেইনি ৷ এই বিচ্ছেদটাকে নিয়তির লেখা হিসেবে মেনে নিয়েছি ৷ আর আমি কখনোই তাকে অভিশাপ দিতে পারবোনা ৷ সে যে আমার হৃদয়েরই অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ সে একটু ব্যথা পেলে আমি পাই তার দশগুণ ৷ ও ভাল থাকুক এটাই আমার একমাত্র কামনা ৷ ওর সুখই সুজনের সুখ ৷ ওকে কাঁদতে দেখলে সুজন সবচেয়ে বেশী ব্যথা পাবে ৷ ওকে ভালবেসেছি বেসে যাব চিরদিনই ৷ আমার ভালবাসা পবিত্র ৷ ওকে কখনো ছুঁয়ে দেখিনি ৷ নিরাপদ দুরত্বে থেকে ওর চুলের গন্ধ পেতাম নাকে ৷ সে কিযে অনুভুতি ৷ ছুয়ে দেখার চান্স ছিল ৷ কেউ দেখে ফেলার ভয়ও ছিলনা ৷ তবুও ছুইনি কোনদিনও ৷ যদি ছুঁই চিরদিনের বন্ধনে বেধেঁই ছোয়ার ইচ্ছে ছিল ৷ কিন্তু সে বন্ধনে আর জডানো হলো না আমার ৷ বুকটা মাঝে মাঝে চিনচিনিয়ে জলে উঠে প্রচন্ড আবেগে চোখ বেয়ে অশ্রুর প্লাবন হয় ৷ মনে হয় এখনই গিয়ে ওকে তুলে নিয়ে আসি ৷ তুইতো জানিস ওখানেও আমার কয়েকজন ফ্রেন্ড আছে ৷ ইচ্ছে করলে সব করতে পারি ৷ কিন্তু বিবেক কখনো সায় দেয়না ৷ মনে হয় বিধাতা কেন বিবেক আর প্রেম সবই দেয় ৷ আজকে কেন আমার বিবেক আর প্রেম মুখোমুখি অবস্থানে দারিয়ে ৷ বিবেকের চাহিদা প্রেমকে কেন অন্যের হাতে তুলে দেয় ৷ যদি কিছুটা সময়ের জন্য বিবেকহীন হতে পারতাম তাহলেতো ওকে ছিনিয়ে আনতে পারতাম ৷ বিবেকের আদালতে হেরেই আমি হারিয়েছি তাকে ৷ নাহয় কেউ তাকে আলাদা করতে পারতোনা আমার থেকে ও থাকতো আমারি ৷ হায়রে বিবেক তুই কেন এত ভাবিস ৷ তোর ভাবনাই যে আজ আমার প্রেয়সীকে নিয়ে গেছে অনেক দুরে ৷ তুই একটু ঘুমিয়ে থাকনা আমি আমার পাখিটাকে আমার করে নেই ৷ বিবেক ঘুমাবার নয় সুজন বিবেক তোর পাহারাদার ৷ বিবেকের পাহারায় তুই নিরাপদে ৷ পরিবারে, সমাজে, বন্ধুমহলে তোর যতটুকু মুল্যায়ন সেটা তোর বিবেকই তোকে গড়ে দিয়েছে ৷ তুই কি চাস শুধু তোর প্রেয়সীর জন্য সব ত্যাগ করতে ৷ পারবি তুই? হয়তো পারবি ৷ কিন্তু তুই কি একটুও ভেবেছিস তোর পাখিটা ওখানেই সুখে আছে এখন তোর কোন হস্তক্ষেপ হয়তোবা ওর সব সুখ কেরে নেবে ৷ প্রেয়সীর চোখের পানি তুই সহ্য করতে পারবিতো যদি পারিস তবে আমি বিবেক ছুটি নিলাম ৷মানুষের সবচেয়ে বড় পাহারাদার তার বিবেক ৷ বিবেকের অনুপস্থিতি মানুষকে হিংস্র হায়েনাতে পরিনত করে ৷ সুজন হিংস্র হায়েনা হতে চায়না ৷ সুজন একজন মানুষ হিসেবেই বাঁচতে চায় তাই আর বিবেককে ছুটি দিতে পারলনা সুজন ৷ সুজন সত্যিই সুজন ৷ সুজন মানে নাকি ভাল মানুষ ৷ সুজন নিজের নামের ওপর অবিচার করেনি কখনো ৷

মহান স্রষ্টার সৃষ্টির পরতে পরতে রয়েছে মানুষের জন্য নিদর্শন 2

মহান স্রষ্টার সৃষ্টির পরতে পরতে রয়েছে মানুষের জন্য নিদর্শন 2 ******************* কে বানালো এই পৃথিবী? কে বানালো চন্দ্র সুর্য? কে বানালো মানুষ, জিন ৷ কে বানালে জগতের সবকিছু ৷ কে বানালো সাগর, নদী? কে বানালো পাহাড়, টিলা? কে বানালো হাজার হাজার জীব? কেইবা বানালো মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ট জাতি ৷ আর তাঁর সৃষ্টির মধ্যে এতগ্রহ নক্ষত্র থাকতে ৷ কেনইবা আমাদের এই পৃথীবিতে ৷ সুর্যের মত কোটি কোটি নক্ষত্র আছে ৷ আর হয়তো সব নক্ষত্রের নিজস্ব অনেক গ্রহ উপগ্রহ আছে ৷ স্রষ্টা মহান তাঁর সৃষ্টিও অনেক বড় ৷ তাঁর যত সৃষ্টি তার মাঝে মানুষ শ্রেষ্ট ৷ কিন্তু আমরা মানুষই সবচেয়ে বেশী নাফরমানী করেন ৷ মহান প্রভু আমাদের দিয়েছেন অফুরন্ত নেয়ামত রাজি ৷ কিন্তু আমরা তার নেয়ামত ভোগ করেও তার নাফরমানীতেই থাকি ব্যস্ত থাকি ৷ আল্লাহ যেন আমাকে / আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করে ৷ আমাকে যেন তাঁর খাস গোলাম হিসেবে কবুল করেন ৷ আমাকে যেন প্রকৃত ইমানদার না বানিয়ে মৃত্যু না দেয় ৷ আমাকে যেন জান্নাতের পথের যাত্রী না বানিয়ে মৃত্য না দেয় ৷

জীবনের বাঁকে বাঁকে কত স্মৃতি জমে থাকে

জীবনের বাঁকে বাঁকে কত স্মৃতি জমে থাকে ************************************** আজো ভুলে যাইনি, হয়তো ভুলবোনা কোনদিনও ৷ জীবনে ঘটে যাওয়া এমন হাজারটা গল্প বলা হয়নি আজো ৷ সেই ছোটবেলা, সেই সকালের মক্তবে যাওয়া, স্কুলে যাওয়া আর বিকালে খেলার মাঠে ৷ সন্ধায় ওস্তাদের সামনে পড়তে বসে ঝিমানো ৷ কখনো মায়ের শাসন বাবার আদর আবার কখনওবা বাবার শাসন মায়ের আদর ৷ পড়ালেখার ফাকে আনলিমিটেড দুষ্টুমি আর হাত পেতে বেত্রাঘাত সহ্য করা ৷ এরকমের হাজারো স্মৃতির কথা আজও মনে আছে ৷ যখন বড় হয়েছি বুঝতে শিখেছি তখনকার কত স্মৃতি কখনো সুখের কখনোবা দুখের ৷ ছাত্রাবাসের জীবন সেখানে বন্ধুদের সাথে একসাথে থাকা দুষ্টুমী করা হাসিখুশি জীবন ৷ কত মধুর স্মৃতি, কত পাগলামি ৷ কখনো কোন বন্ধুর সাথে টুকটাক ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া ৷ আবার ভুল বুঝতে পেরে সরি বলা এ সবই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ এর মাঝে জমে থাকে কত রঙ্গের স্মৃতি ৷ কত দুঃখ বেদনা, কত হাসি আনন্দ ৷ আমার জীবনের যত দুষ্টামি, পাগলামি , হাসি আর কান্নার গল্প গুলো লিখবো ধীরে ধীরে ৷ হয়তো ভাল লাগবে আপনার হয়তোবা মন্দ ৷ লিখবো কি বন্ধু? যদি বলেন তবে লিখি......

মহান স্রষ্টার সৃষ্টির পরতে পরতে রয়েছে মানুষের জন্য নিদর্শন

মহান স্রষ্টার সৃষ্টির পরতে পরতে রয়েছে মানুষের জন্য নিদর্শন ************************* বিস্ময়কর ডেড সি, যে সাগরে কেউ ডুবে না ! নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীর আনাচে কানাচে লুকিয়ে থাকা হাজারো বিস্ময়ের অন্যতম একটি নাম ডেড সি বা মৃত সাগর। ডেড সি এমন একটি সাগর যে সাগরের পানিতে কেউ ডুবে না। এমনকি কেউ ডুবতে চাইলেও ডুবতে পারে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পৃথিবীর সকল খাল, বিল, পুকুর, নদী, সাগরের পানিতে মানুষসহ যেকোনো জিনিস সহজেই ডুবে যায় কিন্তু ডেড সির পানিতে ডুবে না কেন? কি রহস্য আছে এই পানিতে? আসলে ডেড সি একটি অতি লবণাক্ত পানি সমৃদ্ধ সাগর। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিভিন্ন উপাদানের কারণে ডেড সি’র পানির প্লবতা শক্তি পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের পানির চেয়ে অনেক বেশি। আর এই উচ্চ প্লবতা শক্তির কারণে এই সাগরে কোনও কিছু ডুবে না। যে কেউ মৃত সাগরের পানিতে ভেসে থাকতে পারে। এটি জর্ডানে অবস্থিত। ডেড সি’র পশ্চিমে পশ্চিম তীর এবং ইসরাঈল, পূর্বে জর্ডান অবস্থিত। এন্ডোরেয়িক হাইপার-স্যালাইন ধরনের এই সাগরের পানির প্রধান উৎস জর্ডান নদী। এই সাগরের পানির লবণাক্ততা শতকরা ৩০ ভাগ যা অন্যান্য সমুদ্রের পানির চাইতে ৮.৬ গুণ বেশি লবণাক্ত। ধারণা করা হয়, এটি একটি অভিশপ্ত স্থান। কেননা ডেড সি’তে কোন মাছ নেই, কারণ এই সাগরের পানিতে কোনও মাছ বাস করতে পারে না। তেমনিভাবে এর পাশে জর্ডান নদীতেও কোনও মাছ নেই। সময়ের কণ্ঠস্বর

Sunday, February 15, 2015

গল্প নয় বাস্তব সত্য - 07

গল্প নয় বাস্তব সত্য - 07 ================== সাক্ষাতকার কক্ষ থেকে বের হলো সবাই ৷ গরমে সেদ্ধপ্রায় হয়ে ৷ একটু বিশ্রাম নিয়ে গেল সবাই কারা ক্যান্টিনে ৷ সেখান থেকে ছোটর জন্য কিছু শুকনো খাবার আর কিছু ফ্রুটস কিনলো ৷ সাবান, টুথপেস্ট , ব্রাশ , আর প্রয়োজনীয় যা কিছু লাগে সবই পাঠালো ছোটর জন্য ৷ পরের কাজ পিসিতে টাকা জমা দেওয়া ৷ খাবার কিনে খেতে হবেতো ছোটকে ৷ শুকনো খাবারতো অর্ধেকও পাবেনা ছোট ৷ তবুওতো কিছু খাবার দিতেই হবে মনতো মানেনা ৷ পিসিতে টাকা দিয়ে বের হল সবাই ৷ চাচাতো , জেঠাতো , আর মেজোকে বললো তোরা চলে যা আমি দোস্তর কাছ থেকে টাকাটা নিয়ে আসি ৷ পরক্ষনেই আবার ভাবলো যদি এখন গিয়ে দোস্তকে না পাই তাহলেতো মেসে ফেরার ভাড়া হবে না, আগে ফোন করে কনফার্ম হই ৷ এই তোরা একটু ওয়েট কর দেখি দোস্ত আছে কিনা ৷ ফোন দিল দোস্তকে ৷ হ্যালো দোস্ত কই তুই? আমি দোকানেই আছি ৷ কি ব্যপার বলতো ৷ না এমনিতেই তোর ওখানে আসতেছি ৷ ঠিকআছে আয় ৷ ওই তোরা চলে যা ৷ আর ভাল কথা, আব্বা, আম্মাকে বুঝাইয়া বলিস যাতে কোন টেনশান না করে আমি আছিনা ৷ যতক্ষন আছি যে কোন মুল্য ছোটর রিমান্ড বাতিল করাবোই ৷ এই বলে বিদায় নিল বড় ভাই ৷ চললো বন্ধুর কাছে ৷ বন্ধু করি তোর এই অবস্থা কেন? তোর চেহারা ছুরতের একি অবস্থা ৷ কিযে রসনা দোস্ত আমার ছোট জেলে আর তুই আছিস আমার চেহারা লইয়া ৷ সত্যিরে দোস্ত তোর মত ভাল দোস্ত আর ভাই কে হতে পারে? হ আর হাওয়া দিতে হবেনা চল চা খাব ৷ কি বলিস তুই চা খাবি কত দিন পর এলি তাও আবার দুপুর বেলা , মনে হয় এখনো খাবার খাসনি ৷ বাদদেতো ওসব এখন খাবার দাবার ভাল লাগেনা ৷ দোস্ত জোর করে টেনে পাশের মিনি চাইনিজে নিয়ে গেল ভাইকে ৷ খাবারের অর্ডার করলো ৷ ভাই বললো দোস্ত আমি খেতে পারবোনা সব নষ্ট হবে ৷ যতটুকু খেতে পারিস খা নাহয় আমি রাগ করবো ৷ ভাই খেতে শুরু করলো ৷ দু তিন লোকমা খেয়েই থামলো ভাই ৷ দোস্ত বললো কিরে কি হল ? তোর চোখে পানি কেন? চাইনিজ খাচ্ছিতো তাই ৷ এটা কি নতুন খাস নাকি তুই? না নতুন না কিন্তু দোস্ত আমার ছোটকে যে ভাত দেওয়া হয় সেটা নাকি লাল ভাত ইট পাথরে ভরপুর ৷ গন্ধও লাগে ৷ আর আমি চাইনিজে বসে খাচ্ছি ৷ আচ্ছা বলতো ও তোর ভাই না সন্তান ৷ ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের এত দরদ আমি কখনো দেখিনি ৷ ঠিকই বলেছিস দোস্ত ওরা আমার সন্তানের চেয়েও প্রিয় ৷ ওদেরকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ৷ একজন ইঞ্জিনিয়ার হবে একজন বিসিএস ৷ আর দোস্ত আমার একটা বাবু হইছে এইতো ছোট এরেষ্ট হওয়ার আগের দিন বিকেলে ৷ বাপের মুখটাও ভাল করে দেখা হয়নি ৷ ঢাকা চলে আসতে হলো ৷ যাক ভাইটা ছাড়া পেলে দুভাই একসাথে বাডি গিয়ে বাপরে দেখবো ৷

Saturday, February 14, 2015

সেদিন কেঁদেছিলাম খুব-02

সুজনের বন্ধুদের মধ্যে একজন আছে ওর ভাতিজা নাম তুষার ৷ ও সুজনের অনেক বেশী ঘনিষ্ঠ ৷ যদিও জুনিয়র তবুও সব সময় একসাথে চলাফেরা ৷ ওর মাধ্যমেই সুজনের জুনিয়রদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল ৷ তো তুষার একবার ঢাকায় এলো সুজনের কাছে ৷ ও প্রায়ই আসে কিন্তু সে বারেই ঘটেছিল এ গল্পের মুল ঘটনা ৷ সুজন আর তুষার বসে বসে গল্প সল্প করছিল ৷ এ সময় তুষারের ফোনে একটি মিসডকল আসল কলব্যাক করে তুষার কথা বললো ৷ দুজন দুজনাকে আপনি করে বলছে ৷ তবে ফোনের ওপাশের কন্ঠটা মেয়েলি কন্ঠ ৷ খুব মিষ্টি মেয়েটির কন্ঠ ৷ কয়েক মিনিট কথা বলে ফোন রাখলো তুষার ৷ সুজন তুষারকে জিজ্ঞেস করলো কেরে মেয়েটা পাইলি কই ৷ সে বছর তুষারের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা ছিল সপ্তাহ খানেক আগেই পরীক্ষা শেষ হয়েছিল ৷ তুষার জানালো মেয়েটা তার সাথে পরীক্ষার সময় পরিচয় হয়েছিল এখন ওরা ভাল বন্ধু ৷ দেখ তোর বন্ধু না জি এফ সত্যি করে বল নইলে মারুম কিন্তু ৷ কসম চাচা ভাল বন্ধু ছাড়া আর কিছুই না , তবে কোনদিন হয়তো gf হইয়া গেলেও যেতে পারে ৷ সুজন বললো মেয়েটা কেমনরে বাপ ৷ তুষার উত্তর দিলো হাইট আপনার চেয়ে একসুতাও কম হবে না ৷ গায়ের রং আপনার মতই কিন্তু চিকনী চামেলী যেছকো ক্যাহতে হ্যায় ৷ চেহারা আকর্ষনীয় ৷ তবুও শুধু প্রেম করা যাবে বিয়ে করার মত নই ৷ তুষারের ব্যপক পরিবর্তন দেখে অবাক সুজন ৷ ছেলে বলে কি? প্রেম করার মত মেয়ে কিন্তু বিয়ে করার মত নয় ৷ যদি বিয়ে করার মত নাই হয় তাহলে কেনইবা প্রেম করার মত হবে? বিয়ে না করার চিন্তা করে প্রেম তার মানেই ঠকবাজি ৷ তুষার বললো আজকাল মেয়েরাও এমনই কারো সাথে প্রেম করে যাষ্ট ফর টাইমপাস ৷ তার চেয়ে উপযুক্ত পাত্র পেলেই প্রেমিকের পাছায় ফ্রি কিক ৷ এই হলো আজকের অবস্থায় ৷ কিন্তু সুজন মানতে রাজি নয় ৷ সুজন একবার একটা প্রেমে পরেছিল ৷ মেয়েটা ছিল সুজনের রিলেটিভ ৷ বাবা , মা, ভাই, বোন সবাই জানতো বিষয়টা ৷ মেয়েটার সাথে রিলেশন থাকার সময় সুজনকে আরো দু তিনজন মেয়ের ভাল লেগেছিল ৷ ওরা ছিলো সুজনের খালতো বোনের বান্ধবী ৷ বিভিন্ন সময়ে খালাতো বোন বলতো ওমুক আপনার সম্পর্কে একথা সেকথা বলে ৷ আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে ৷ আপনি চাইলে মিলাইয়া দিতে পারি ৷ সুজনের খালাতো বোন ভাল করেই জানতো রিলেটিভ মেয়েটার সাথে সুজনের সম্পর্কের কথা ৷ তারপরও বলতো ৷ ভাই এসব কোন ব্যপারই না আজকাল ছেলে মেয়েরা প্রেম করে একজনের সাথে বিয়ে করে অন্যজনকে এটা কোন ব্যপার না ৷ প্রেম মানে টাইমপাস ৷ জীবনে যার সাথে প্রেম করে তাকে বিয়ে করলে মানুষটা থাকে বাট লাভটা থাকেনা ৷ প্রেম করে বিয়ে না করলে হয়তো মানুষটা থাকেনা কিন্তু লাভটা থেকেই যায় ৷ সুজন এসব মানতে রাজিনা ৷ তুষারের কথা শোনার পর সুজন কিছুক্ষণের জন্য অতীতে ফিরে গিয়েছিল ৷ তখনকার কথা গুলো চিন্তা করে তুষারের সাথে অনেকটাই একমত হলো সুজন ৷ ভাবছে সত্যিই তো তাই নাহয় আজ চার বছর হলো রিলেটিভ মেয়েটার বিয়ে হয়েছে কিন্তু আজও সুজন তাকেই কল্পনা করে স্বপ্ন দেখে ৷ মাঝে মাঝে সুজনের মনে হয় মেয়েটি হয়তো ফিরে এসে সুজনকে বলছে তুমি এত কি ভাবছো এইতো আমি ৷ তোমার সেই আমি আজও তোমারই আছি ৷ তোমারই থাকবো চিরদিন ৷ তুমি কি মনে কর আমি অন্যকারো হয়ে গেছি না না আজও তোমার আমি তোমারি আছি ৷ বাস্তবে সুজন জানেনা মেয়েটা এখনো সুজনকে ফিল করে কিনা ৷ বিয়ের চার বছরে একবারও সুজনের সাথে যোগাযোগ করেনি ৷ হয়তো ভুলে গেছে হয়তো না ৷ সুজন অনেক চেষ্টা করেছিল মেয়েটার সাথে যোগাযোগ করার কিন্তু পারেনি ৷ আবার সেই হারিয়ে যাওয়া প্রেয়সীর সুখের কথা চিন্তা করে কখনো থেমে যেত ৷ ভাবতো আমি যদি যোগাযোগের চেষ্টা করি তাহলে হয়তো আমার জানপাখিটার জীবনকে কালোমেঘ ঢেকে দিতে পারে না ৷ এটা হতে পারেনা ৷ ওকে সুখী দেখলেই আমার সুখ ৷ ওর কোন দুঃখ সুজন দেখতে পারবেনা ৷ হয়তো আমি তাকে এতটা সুখ দিতে পারতামনা ৷ তাই বিধাতা তাকে অন্যখানে নিয়ে গেছে যেখানটায় ও সুখী রবে ৷ তাহলে আমি কেন ওর জীবনে কালো মেঘ হয়ে উদিত হবো ৷ ওর ওপর আমার কোন অধিকার নেই ৷

গল্প নয় বাস্তব সত্য -06

গল্প নয় বাস্তব সত্য -06 ================ ঠিক আছে বলে উকিলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মেসের দিকে রওয়ানা হলো ভাই ৷ পকেটে অবস্থা নাজুক ৷ রিক্সা ভাড়াটা হবে হয়তো ৷ দুপুরের খাবার এখনো খাওয়া হয়নি ৷ মেসে ফিরে দেখে খাবার আছে খেয়ে নিল কয়েক লোকমা বাকীটা যোগ হল এঁটোর তালিকায় ৷ এটা আজ ক'দিনের কমন ব্যপারে পরিনত হয়েছে ৷ খাবার শেষে দোকানে গেল রিচার্জ করতে হবে ৷ মনে হল পকেটতো খালি ৷ ফিরে এসে পরিচিত বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শ'পাঁচেক টাকা নিলো ৷ মোবাইলে রিচার্জ করলো দুশ টাকা ৷ মেসে ফিরে এসে কোথায় ফোন দেওয়া যায় ভাবছে ৷ কাকে ফোন দিলেইবা টাকা পাওয়া যাবে সবারই তো আর্থিক অবস্থা খারাপ ৷ তবুও টাকাতো জোগাড় করতেই হবে কোর্টে গেলেইতো টাকা দরকার ৷ মনে হয় কোর্টের ইটও হা করে থাকে টাকার জন্য ৷ টাকা ছাড়া সেখানে কিছুই হয়না ৷ তার ওপর রিমান্ডতো যে কোন মূল্যেই বাতিল করতে হবে ৷ যত টাকাই লাগুকনা কেন ৷ প্রয়োজনে রক্ত বিক্রি করতে হবে তবুও ছোটর রিমান্ড হতে দেওয়া যাবেনা ৷ রিমান্ড আসলে কি ? কি করে রিমান্ডে ? তার স্বচ্ছ কোন ধারনা নাই ভাইয়ের ৷ তবে খবরে, সোস্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে ৷ ইদানিং বিরুধীদের ধরলেই রিমান্ড আর রিমান্ড মানেই হাড় গোর ভেঙ্গে একাকার ৷ পুলিশ ছোটর সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে ৷ যদি একদিনও রিমান্ড মঞ্জুর করে তাহলে কি হবে ৷ বাবা মা খবর পেলে হয়তো, ,,,,,,,,, না এ হতে পারেনা ৷ শুরু হল চারিদিকে ফোন ৷ বিপদে বন্ধুর পরিচয় দিতে অনেকেই ব্যর্থ কিন্তু এক বন্ধু বললো টেনশান করিসনা বিশ, পঞ্চাশ যা কাল এসে নিয়ে যাস ৷ কৃতজ্ঞতার সুরে ভাই বললো দোস্ত আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম বাচালি তুই ৷ দোস্ত বলে কি বলিস এটা কোন কথা, এতটুকু যদি তোর বিপদে করতে না পারি তাহলে আমরা কিসের দোস্ত ৷ দু এক বছর আগে হলেতো লাখ টাকার জন্যও তোর কাউকে ফোন দিতে হতোনা তুই খুব ভালরে দোস্ত ৷ জীবনে অনেকের জন্য অনেক করেছিস ৷ আজ অনেকেই তোর বিপদে পাশে দ্বাডাকে পারেনি আমিযে পেরেছি সেটাতো আমার সৌভাগ্য ৷ ভাই বললো দোস্ত সেটা এখন গল্প বাদ দে ওসব ৷ আর দোস্ত আমি কাল নয় পরশু আসবো ৷ কাল ছোটকে দেখতে যেতে হবে ৷ দোস্ত বললো ঠিক আছে যখন সময় হয় আসিস ৷ ওকে দোস্ত ৷ ভালো থাক ৷ সোমবার সকাল গ্রামের বাড়ি থেকে চাচাতো, জেঠাতো আর মেজো এলো ৷ সবাই জেলগেটে ৷ ভাইয়ের কাছে টাকা নেই কিন্তু ওদের কাছে আছে ৷ তাই আজ আর ভাবতে হলোনা ভাইকে ৷ ছোটর সাথে সাক্ষাতের সময় হলো সবাই ভিতরে কিন্তু ছোটর আসার খবর নাই ৷ তাই আবার ভেতরের কাগজ কলম ওয়ালা একজনকে ইশারা করে ডাকলো আমার ভাইকে একটু ডেকে আনবেন? নাম, বাপের নাম , থানার নাম কন ৷ টাকা লাগবে কিন্তু তিনশো পেছন থেকে চাচাতো এসে বললো পঞ্চাশ দেবো নিয়ে আসেন ৷ না হবে না দুশত দিতে হবে ৷ অবশেষে একশততে ডিল ফাইনাল ৷ লোকটি চলে গেল ৷ কিছু সময় পর ছোটকে সাথে নিয়ে আসলো লোকটা ৷ এইযে ভাই আপনার ভাইরে আনছি টাকাটা দেন ৷ একশত টাকা বের করে দিল চাচাতো ৷ চারজন সাক্ষাৎ প্রার্থী ছোটর সাথে একের পর এক একটু আধটু কথা বলে নিচ্ছে ৷ এরই মধ্যে একটা লোক ভেতর থেকে ছোটকে টেনে সরিয়ে দিচ্ছে ৷ বলছে সাক্ষাৎ টাইম শেষ আরও কথা বলতে হলে দুশত টাকা দেন ৷ তারমানে তিনশত পাক্কা ৷ এবার মেজো দুশত দিলো ৷ সবাই আরো কিছুক্ষণ কথা বলে বিদায় জানালো ছোটকে ৷চলচে........

সেদিন কেঁদেছিলাম খুব-01

সেদিন কেঁদেছিলাম খুব-01 ================== সুজন তার নাম ৷ ভালই স্মার্ট ৷ গায়ের রংটাও ফর্সা ৷ এভারেজ হাইট ৷ খুব-ই বন্ধুত্ব প্রবন ছেলে ৷ কারো সাথে কথা বলার সুযোগ পেলেই ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যায় ৷ সুমিষ্ট বচনভঙ্গী ৷ একবার কারো সাথে কথা বললে মনে রাখতে হবে অনেকদিন ৷ ওর বন্ধুবান্ধব অনেক ৷ প্রায় পঞ্চাশ ষাট জন ৷ ও সবার কাছেই ভাল বন্ধু ৷ দু-তিন ব্যাচ সিনিয়র / জুনিয়ররাও ওর ফ্রেন্ড ৷ কাউকে কখনো অবহেলা করেনা ৷ তাইতো বন্ধুদের কেউ সময় পেলেই ফোন দেয় ৷ ওদের টোটাল গ্রুপটাই চরম আড্ডাবাজ গ্রুপ ৷ আড্ডাবাজিতেই মেতে থাকতে পছন্দ ওদের ৷ চাকুরি, ক্লাস কিংবা ব্যবসা যে যাই করে চান্স পেলেই আড্ডাবাজি ৷ ওদের আড্ডাটাও জমে বেশ ৷ কারো কোন কারনে মন খারাপ হলে এই আড্ডাই যেন তাদের রিফ্রেশ বাটন ৷ আড্ডা দিয়েই ভুলে যায় সব ৷ এভাবেই চলছে ওদের দিন ৷ তবে সবাই বেশ ভালো একটু আধটু দুষ্টামিতো থাকবেই ৷ সবাই সমাজের এ ক্লাস ছেলে ৷ সবাই এডুকেটেড ৷ ভাল ছাত্রও বটে এরকম একটা আড্ডাবাজ গ্রুপ সবার ভাগ্যে জুটেওনা ৷ সুজন ঢাকাতেই থাকে, ওর বাবা ছোটখাটো একটা বিজনেস করে ৷ সুজন বাবাকে কিছুটা হেল্প করে ৷ তা ছাড়া একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে পার্ট টাইম জব করে ৷ কমিশন বেজড হওয়াতে ভালই সুজনের ইনকাম ৷ কাজের ওপর নির্ভর করে 15000 - 55000 হাজার পর্যন্ত ৷ কিন্তু টাকা কোথায় যায় জানেনা সুজন ৷ মাঝে মাঝে সংসারে কিছু খরচ করে তবে রেগুলার না ৷ খারাপ কোন নেশাও নাই তার ৷ তার সবচেয়ে খারাপ নেশা তার নিজের দৃষ্টিতে সিনেমা দেখা ৷ সব সিনেমা আবার দেখেনা ৷ ভাল কোন সিনেমা এলে বন্ধুবান্ধব নিয়ে হলে গিয়ে দেখে ৷ আড্ডাবাজ সবখানেই আড্ডাবাজি করতে পছন্দ করে ৷ সিনেমা দেখা মানেই দু তিন হাজার খরচ ৷ হয়তো আগে নাহয় সিনেমার পরে কোন একটা ভাল রেষ্টুরেন্টে পেট ভরে খেতে হয় ৷ আর প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার গ্রামের বাড়ি আসতেই হয় সুজনের বন্ধুবান্ধবের সাথে গ্রামের পাশের নতুন রাস্তায় সপ্তাহে একবার আড্ডা দিতে না পারলে ওর যেন পেটের ভাত হজম হয়না ৷ গ্রামে অনেকই ওকে স্নেহ সন্মান করে ৷ ছোট বেলা থেকেই সুজন সেটা ধীরে ধীরে অর্জন করেছে ৷ পড়া লেখাও ঠিকঠাকমতো করে, আড্ডাবাজি, খেলাধুলা সবখানেই সুজন থাকে ৷ মসজিদের জামাতে ও পাওয়া যায় তাকে ৷ সামাজিক কাজে যথাসাধ্য লেগে থাকার চেষ্টা করে ৷ কারো বিপদ আপদে সামান্যতম সহযোগিতা করতে পারাই তার কাছে গর্বের বিষয় ৷ তাইতো সুজন অনেকের কাছে আদরনীয়, অনেকের চোখে শ্রদ্ধারপাত্র , কারো কাছে পরম বন্ধু ৷ বাবা মা, ভাই বোন সকলের বিশ্বস্ত সুজন ৷ মাঝ রাত পর্যন্ত বাইরে আড্ডা দিলেও কেউই কিছু বলেনা ৷ সুজন ডিগ্রীপাশ করেছে রেজাল্টও ভালো ৷ আজ অবদি কোন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে বাবা মায়ের কাছে বিচার দিতে পারেনি ৷ গ্রামের মানুষরাতো নয়ই ৷ যদি কোন অচেনা লোক সুজনের গ্রামে কোন বিষয়ে সুজনের নামে বাজে কোন বিষয়ে বিচার দিতে আসে তাহলে মার খাওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে ৷ আর ওদের আশেপাশে দশগ্রামে ওর অনেক বন্ধু ৷ সবার কাছেই সুজন ভাল বন্ধু ৷ যেখানেই যায় বন্ধ নাহয় বন্ধুর পরিচিত কাউকেনা কাউকে পেয়ে যায় ৷ চলবে........

গল্প নয় বাস্তব সত্য-৫

গল্প নয় বাস্তব সত্য-৫ ================ নামাজ শেষে বের হয়ে একটা রিক্সায় চড়ে মেসে ফিরলো ভাই । কিছু ভেবে পাচ্ছেনা ভাই কিভাবে আব্বাজান-আম্মাজানকে খবরটা জানাই ? ভাবতে ভাবতে ঠিক করলো নুর আংকেল কে ফোন দেই । বলি আব্বাকে যেন শান্তভাবে বুঝিয়ে বলে ছোটর কথা । আর যেন বলে চিন্তা করবেননা বড় আছেতো রবিবারেই জামিন হয়ে যাবে । হ্যালো আসসালামু আলাইকুম। কাকা কেমন আছেন ? আলহামদুলিল্লাহ তুমি কেমন আছো ? ভাল কাকা । কাকা আপনি একটু কষ্ট করতে পারবেন ? কি ব্যপার বলতো । না কাকা আমাদের ছোট এরেষ্ট হইছেতো খবরটা এখনো আব্বা আম্মা জানেনা । আপনি যদি আমাদের বাড়ী গিয়ে বিষয়টা একটু ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলতেন তাহলে ভাল হতো । ঠিক আছে তুমি চিন্তা করোনা আমি বুঝায়ে বলবো । ওর এখন কি খবর ? কোথায় আছে ? আছে কেন্দ্রীয় কারাগারে । মাত্র দেখা করে বের হলাম । খাবার দাবার , টাকা পয়সা কিছু দিছো ? জি দিছি । আপনি একটু কষ্ট করে যাইয়েন কাকা । ঠিক আছে আমি এক্ষুনি যাচ্ছি । আল্লাহ হাফিজ । তার আধা ঘন্টা পরই আব্বাজানের ফোন বাবা ছোটর কি হইছে ? না কিছু হয়নাইতো আব্বা । আমারে লুকাস আমি তোর নুরু কাকার কাছ থেকে সব শুনছি বাবা । আব্বা আপনি কোথায় আম্মা কাছে আছে নাকি ? না তোর আম্মাতো বাড়ীতে আমি বাড়ীর বাহিরে চলে আসছি । বল ছোটর কি খবর ? ভাল আব্বা আশা করি রবিবারে জামিন হইয়া যাবে । আর আপনি চিন্তা করবনেনা আম্মাকে এখনই কিছু বলার দরকার নাই । আর দোয়া করবেন, দোয়াতো করিই । তুইও সাবধানে থাকিস বাবা । জি আব্বা । আসসালামু আলাইকুম । কেটে গেল আরো একটি নির্ঘুম রাত ৷ পরদিন শনিবার কিছু টাকা সংগ্রহ করতে হবে কালযে আবার কোর্ট আছে ৷ কেয়েকজন বন্ধুবান্ধবের স্বরনাপন্ন হয়ে টাকা জোগাড় করলো ৷ উকিলের সাথে কথা বললো কয়েক দফা ৷ টাকা একটু বেশী করে নিয়া আসবেন কালই জামিন হবে আশা করি ৷ ঠিক আছে ৷ স্বপ্ন দেখে কাল আদালতে হাজির হলেই জামিন হবে ভাইটার ৷ তারপর ছোটকে নিয়ে বাড়ি যাবো ৷ রবিবার সকালেই কোর্টে হাজীর হয়ে উকিলের সাথে দেখা করে ভাই ৷ বেলা গরিয়ে প্রায় সাড়ে দশটা ৷ একজন পুলিশকে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে ভেতরে খবর নিল ছোট আসছে কিনা ৷ না আসেনি গেইটের সামনেই অপেক্ষায় থাকলো ভাই ৷ প্রতিটি প্রিজনভ্যানের এপাশ ওপাশে উকি মারে কখন আসবে ছোট ৷ দুদিন ভাইটা কি খেয়েছে কি জানি ৷ ও আসলেই গরম কাচ্ছি বিরিয়ানী পাঠাতে হবে ৷ হঠাৎই চোখে পড়ল প্রিজনের ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে ছোটর মলিন মুখখানা দেখা যায় ৷ ভাইয়ের চোখ ভরে উঠলো জলে ৷ কলজেটা একটা মোচরে উঠে ৷ কি হয়েছে ছোটর একি হাল ৷ তবুও স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই বললো ভাইয়া তোর জন্য খাবার পাঠাচ্ছি খেয়ে নিস ৷ আর কোর্টে উঠানোর সময় কথা বলবো ৷ প্রিজনভ্যান হাজতের ভিতর ঢুকে গেল ৷ ভাই গেল হোটেল থেকে খাবার আনতে ৷ এনে পুলিশকে দিয়ে পাঠালো ৷ তারপর অপেক্ষা করতে লাগলো কখন কোর্টে উঠাবে আমাদের ছোটকে? গেটেই দ্বারিয়ে ভাই বেলা প্রায় আড়াইটা হাতকড়া হাতে ছোটকে নিয়ে আসছে পুলিশ ৷ কলিজাটা আবার ছ্যাৎ করে উঠলো ভাইয়ের ৷ দ্বিতীয় বারের মত ছোটকে হাতকড়া পড়া অবস্থায় দেখলো ভাই গত বৃহঃস্পতিবার আর আজ ৷ এর আগে তাদের পরিবারের কাউকে কখনো পুলিশে যেতে হয়নি ৷ এবারই প্রথম ৷ মামলার এজাহারে উল্লেখ্য আছে ছোটর নেতৃত্বে নাকি পাঁচশত হেফাজত নেতাকর্মী পুলিশের ওপর হামলা করেছিল ৷ অথচ হেফাজতের ঘটনার সময় ছোট ছিল বাডিতে ৷ আর ঢাকায় থাকলেই বা কি পনের বছরের একজন বালকের নেতৃত্বে পাঁচশত লোকের পুলিশের ওপর হামলা শুনলে শয়তানও বিশ্বাস করবেনা ৷ কিন্তু আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবপারে ৷ পারে তাঁলকে তিল আর তিলকে তাল বানাতে ৷ কোর্টে তোলার পথে ছয়তলা পর্যন্ত ছোট পিছে পিছে ছুটে ভাই ৷ খুব বেশী কথা বলা যায়নি ৷ শুধু শান্তনা স্বরুপ বলেছিল টেনশান করিসনা আজই জামিন হবে ৷ এজলাস চলছে কাঠগড়ায় আসামিরা ৷ ছোটকে কাঠগড়ার অন্য সকলের সাথে দেখা যায়না ৷ ভাই এজলাস কক্ষে ঢুকলে পুলিশ তাকে বের করে দেয় ৷ তাই বাইরে দারিয়ে উকি মেরে দেখছেন ৷ উকিল কিংবা মেজিষ্ট্রেট কারো কথাই শোনা যায়নি ৷ এবার ছোট কে বের করে নিয়ে যাবে ছোটর মুখটা অন্ধকার ৷ ভাই মেজিষ্ট্রেটের কথা না শুনলেও ছোট ঠিকই শুনেছে আবার ছোটর পিছু দৌড়াতে লাগলেন ভাই ৷ তোর জন্য শুকনো খাবার আর পানি এই পলিথিনে ৷ পুলিশ সেটা নিতে দিচ্ছেনা ৷ টাকা ছাড়া কোন কাজই হয়না ৷ একশ টাকা দিতে হল তিনশত টাকার খাবারের জন্য ৷ এরই মধ্যে ছোটর কাছ থেকে ভাই জানল রিমান্ড শুনানি বুধবার ৷ মনে হয় ভাইয়ের কলিজায় আগুন লাগলো ৷ এখন কি হবে ৷ যদি ছোটর রিমান্ড হয় বাঁচবেনা আমার ভাইটা ৷ ইতিমধ্যেই হাজতের গেটে চলে আসলো ৷ ভাই ছোটকে বললো তুই চিন্তা করিসনে কিচ্ছু হবেনা ৷ ওসব রিমান্ড টিমান্ড কিচ্ছু হবেনা তোর ৷ ছোটকে নিয়ে গেল ভিতরে ৷ ভাই ছুটলো উকিলের কাছে উকিল সাহেব আমার ভাইয়ের জামিন হলোনা ৷ উকিল বলে বুধবারে হবে ৷ টাকা লাগবে অনেক রিমান্ড বাতিল ও জামিন দুটি মিলিয়ে প্রায় বিশ হাজার ৷ বুধবারে টাকা নিয়া আসবেন বেশী করে ৷ চলবে.....

গল্প নয় বাস্তব সত্য -4

গল্প নয় বাস্তব সত্য -4 =============== অপেক্ষার প্রহর অনেক দীর্ঘ হয় ৷ সময় যেন কাটছে না ৷ কখন বাজবে এগারটা? একাকি অপেক্ষমান ভাই ৷ অবশেষে এগারটায় সাক্ষাৎ কক্ষের দিকে ঢুকবে এ সময় জেল পুলিশের দেহ তল্লাশি ৷ মোবাইল মানিব্যাগ সব সাথে ৷ জেল পুলিশ বলছে দুশ টাকা দাও ৷ দিয়ে ভেতরে ঢুকল ভাই ৷ শত শত মানুষের সমাগম ৷ পা ফেলার যায়গা নাই ৷ প্রচন্ড গরম ৷ যদিও ওপরে কয়েকটি ফ্যান চলছে ৷ ঘাম ঝরছিল সকলের শরীর থেকে ৷ এদিক ওদিক উকি মারে ভাই না ছোটকে দেখা যাচেছ না ৷ মোটা মোটা রডের ব্যরিকেডের সাথে মোটা গ্লাস লাগানো মাঝখানে ছয় সাত ইঞ্চি জায়গায় টিন লাগানো ৷ টিনে তারকাটার ফুটো ৷ গ্লাসের ওপাশ থেকে কাগজ কলম হাতে একলোক ইশারা করে বলছে টিনের ফুটোয় কান লাগাতে ৷ তাই করলেন ভাই বলছে আসামির সাথে দেখা করবেন ? হ ৷ নাম, বাবার নাম, থানার নাম বলেন ৷ আর কোন জায়গায় আছে বলেন ৷ জানিনা কোথায় আছে, তবে গতকাল এনেছে ৷ ঠিক আছে খুজে এনে দেব তিনশ টাকা লাগবে ৷ জেল কোর্ট সব জায়গায় যেন ফিক্সড রেট তিনশ ৷ না ভেবেই ভাই বললো ঠিক আছে খুজে আনুন ৷ লোকটি বললো এখানেই দ্বারিয়ে থাকুন, কোন দিকে সরবেননা ৷ ওকে ভাই ৷ প্রায় বিশ মিনিট পর লোকটি আসলো সাথে ছোট ৷ কিরে ভাইয়া তোর কি খবর ৷ খুব কষ্ট হচেছ বুঝি? ছোট মনে হয় ভাইয়ের মুখটা দেখেই বুঝে গেছে ভাইয়ের বুকের ভেতরটায় কতটা কষ্ট ৷ ছোট নিজেকে শক্ত করে বললো না কোন সমস্যা নাই ৷ আপনি চিন্তা করবেননা ৷ এরই মধ্যে লোকটি বললো ভাই টাকাটা দেন ওই যে ওনার কাছে দেন ৷ ভাই জেল পুলিশের হাতে তিনশ টাকা দিলো ৷ ছোট বলছে ভাইয়া আম্মা আব্বা জানে? না সূচক উত্তর ভাইয়ের ৷ তোর কি লাগবে বল, টাকা, খাবার ৷ তোরতো অনেক কষ্ট হয় ৷ ছোট বললো ভাইয়া খাবার বেশি দিয়েননা ৷ গতকাল যেগুলো দিছিলেন সব ওরা নিয়া গেছে ৷ কারা? কয়েদিরা ৷ এই কয়েদিরাই জেলখানায় মাতব্বরি করে ৷ ঠিক আছে টাকা দিয়ে যাব তুই কিনে কিনে খাস ৷ ভাইয়া এক পেকে স্টার সিগারেট দিয়েন ৷ কেন বিরি কি করবি? ভাইয়া আমি আসার সময় ম্যাট বলছে তোর সাক্ষাত আইছে আমার লাইগ্যা এক প্যাকেট স্টার দিতে বলবি ৷ আচ্ছা ঠিক আছে ৷ তুই চিন্তা করিস না ভাইয়ে আছি না ৷ রবিবারেই তোর জামিন হইয়া যাইবো ৷ সাক্ষাতের সময় শেষ ৷ বিদায় নিয়ে চলে আসলো ভাই ৷ ছোট ও ভিতরে চলে গেল ৷ ছোটর জানি কেমন লাগছে জানেনা ভাই ৷ কিন্তু ভাইয়ের মনটা খারাপ ৷ ভাই ভাবছে আমার ছোটকে ওরা মারবে নাতো? বাইরে বেরুলো ভাই ঘামে চুপচুপে বদন ৷ কত কথা বলার ছিল ছোটকে সব বলা হয়নি ৷ ভাই আগে কখনো ছোটর জন্য এতটা চান অনুভব করেনি আজ তিনদিন যতটা করছে ৷ সব সময় ফোন করে খোজ নিতো ৷ পডালেখা ও খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো করিস ৷ কিন্তু আজ তিনদিন খেতে গেলে মনেহয় ছোট কি খেয়েছে? গোসলের সময়ও ভাবে ছোট কি গোসল করতে পারে ঠিকমতো? আরও কতকিছু ৷ বাইরে বেরিয়ে একটু জিরিয়ে নিলো ভাই ৷ তারপর একলোককে বললো ভাই ভিতরে খাবার পাঠাবো কিভাবে ? লোকটি বললো ওইযে ক্যান্টিনে যান ওখান থেকে সব পাঠানো যাবে ৷ ধন্যবাদ বলে ক্যান্টিনে গেল ভাই ৷ কারো কাছ থেকে কোন তথ্য জানলে ৷ তাকে ধন্যবাদ জানাতে কখনো ভুল হয়না তার ৷ ক্যান্টিনে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করলো ৷ আরো কিনতে চায় কিন্তু ছোট যে নিষেধ করেছিল ৷ ওরা নাকি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ৷ ক্যান্টিন থেকে একটা বিলের কপি দিল ভাইকে ৷ দিয়ে বললো আপনি চলে যান আসামি খাবার পেয়ে যাবে ৷ ঠিক আছে ৷ এবার টাকা দিতে হবে ৷ ক্যান্টিন থেকে জেনে নিল টাকা কিভাবে দিবে? পরে যেখানে গিয়ে টাকা দিল ৷ কোনকিছুই ভাল লাগছেনা ভাইয়ের ৷ ইতি মধ্যেই জুমার আযানের আওয়াজ ভেসে আসলো কানে ৷ ওজু করে মসজিদে গেল ৷ নামাজ শেষে মহান রবের দরবারে দুহাত তুলে চোখের জলে ভাসতে ভাসতে তাঁর দরবারে ফরিয়াদ করলো ৷ হে আল্লাহ আমার ভাইকে মুক্ত করে দাও ৷ সকল মজলুমকে তুমি হেফাজত কর ৷ তুমিতো সব পারো, তুমিতো সব জান ৷ এখনো বাবা মাকে বলা হয়নি ছোটর বিপদের খবর ৷ চলবে..........

গল্প নয় বাস্তব সত্য 3

গল্প নয় বাস্তব সত্য 3 ============= গতরাত নির্ঘুম কেটেছিল আজ সারা দিনও অনেক ধকল গেল খুব ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় শরীরটা লাগাতেই গভীর ঘুম ৷ কখন যে রাত তিনটা বাজল টেরও পেলনা ৷ হটাৎ চিৎকার করে ঘুম থেকে জেগে উঠলো ওরা আমার ভাইকে মারছে ৷ রুমমেটরা সবাই জেগে গেল ৷ কিরে কি হইছে তোর? ওরা আমার ভাইরে মারতেছে আমি এখন কি করবো? আমার ভাল লাগতেছেনা আমি আমার ভাইকে দেখতে যাব ৷ পাগল হইছো রাতে তোমার জন্য জেলখানার গেট খুলে রাখছে ৷ তোমার ভাইয়ের কিচ্ছু হবেনা ৷ সকালে গিয়ে দেখে আসিস ৷ বাকী রাতটা নির্ঘুম কাটল ৷ ফজরের আযান শুনে গোসল করে নামাজ পরলো ৷ তারপর বের হল রাস্তায় ৷ চারিদিক ফাকা দু একটা রিক্সা ছাড়া কিছু দেখা যাচেছ না ৷ লোকজনও খুব কম ৷ নাস্তা খাবে হোটেলও খোলা নাই ৷ কিছু সময় পর সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ৷ কিন্তু সে মানুষটি ছাড়া ৷ স্বপন মামার হোটেলে ততক্ষণে পরটা হচেছ ৷ মামা নাস্তা দাও ৷ পরটা ডিম, ডালভাজি দিল ৷ একটা পরটা খেয়েই খাওয়া শেষ ৷ ভাবতে লাগলো ছোট কি খেয়েছে? মামা কি হল আর খাবেননা ৷ না মামা ভাল লাগতেছেনা ৷ কি হইছে কোন সমস্যা ৷ মাথা নেরে হুম ৷ মামা সমবেদনা জানালো ৷ বের হয়ে রিক্সা ডেকে জেলগেটে সময় 7:15 ৷ এখনো নাকি টিকিট দেওয়া শুরু হয়নি আরও অপেক্ষা করতে হবে ৷ ভাই টিকিট কোথায় দেয় চা ওয়ালাকে জিজ্ঞস করলে বললো ঐ দিকে যান গিয়ে লাইনে খাড়ান ৷ সিরিয়ালেতো অনেক মানুষ অন্তর চোখই ভাইয়ের মত ৷কেউ কেউ আবার স্বাভাবিক ৷ পরে জানলাম কয়েদিদের আত্বীয় ৷ সহ্য হয়ে গেছে ৷ তাই আর চোখের জলে বুক ভাসেনা ৷ আধা ঘন্টা পর সিরিয়াল পেলাম ৷ বললো নাম বলেন ৷ নাম পিতার নাম যে থানায় গ্রেফতার সে থানার নাম ৷ সবই বললাম ৷ এবার জিজ্ঞেস করল কয়েদি না হাজতি চেয়ে থাকলাম উত্তর দিতে পারিনি ৷ পরে জিজ্ঞেস করলো কবে গ্রেফতার হয়েছে? বললাম বুধবার ৷ দশ টাকা নিয়ে টিকিট দিল ৷ ভাবলাম এখনি হয়তো দেখবো ছোটকে ৷ কিন্তু টিকিটের গায়ে দেখি সাক্ষাত টাইম এগারোটায় ৷ চলবে....... ..

গল্প নয় বাস্তব সত্য 2

গল্প নয় বাস্তব সত্য 2 =========== দিনটা ছিল বুধবার বাবা মাকে কিছু না বলেই জরুরী কাজে ঢাকা যেতে হবে বলে ঘর থেকে বের হয় ৷ রাস্তায় এসে বন্ধুর কাছে বলেছিল ঢাকা যাচ্ছি ছোট ভাই এরেষ্ট হইছে ৷ তুই কাউকে বলিসনা ৷ বিশেষ করে আমাদের পরিবারের কাউকে না ৷ বিপদের পথ বহু দীর্ঘ হয় ৷ অবশেষে থানায় পৌছালে ৷ তারপর থেকে কোর্ট পর্যন্ত লিখেছি ৷ কোর্ট হাজতের গেটের কাছে ঘেষতে দেয়না কোর্ট পুলিশ ৷ পেছন থেকে চাচাতো ভাই সালাম দিল ৷ ওয়াআলাইকুম আস্সালাম ৷ কিরে তুই কোথ্থেকে ? জানলি কি ভাবে? বন্ধু জানিয়েছে ৷ ভাই আপনিতো মনে হয় কিছু খাননি ৷ চলেন কিছু খেয়ে আসি ৷ না আমার ক্ষিদে নেই খাবনা ৷ টেনশন করেন কেন কিছু হবেনা আজকেই জামিন হবে ৷ প্রতিটি প্রিজন ভ্যান আসলেই এপাশ ওপাশ উকি মারে কিন্তু দেখা মিলেনা ৷ হঠাৎই একটা ভ্যানে ছোটকে দেখে ভাই ৷ ছোট একরাত থানা হাজতে থেকে অনেক শক্ত হয়ে গেছে ৷ মুরব্বিদের মত করে বলছে ভাইয়া উকিলের সাথে কথা বলছেন ৷ হ কইছি তুই চিন্তা করিসনা গাড়ি ঢুকে গেল আর কথা হলো না ৷ হ্যালো উকিল সাহেব ছোট আসছে ওরে হাজতে নিয়া গেছে ৷ সমস্যা নাই আপনি ওরে খাবার পাঠান ৷ খাবার কিনে আনার পর এক পুলিশ বলে আসামিকে খাবার দিবা? হ ৷ একটা কাগজে নাম ঠিকানা লেইখ্যা সাথে তিনশ টাকা সহ দাও ৷ বড় ভাই তাই করলো ৷ অপেক্ষা করতে থাকলো কখন কোর্টে উঠাবে ৷ কখন জামিন হবে বিকেল তিনটায় কোর্টে উঠালো কিন্তু জামিন হলোনা ৷ কলজেটা ফেটে যাচ্ছে তবুও নিজেকে শক্ত রেখে ছোটকে বললো তুই চিন্তা করিসনা রবিবার জামিন হয়ে যাবে ৷ পরে চোট কে আবার হাজতে নিয়ে রাখে ৷ ভাই চলল কিছু শুকনো খাবার আর পানি আনতে ৷ এনেই আবার ওই পুলিশকে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে খাবার গুলো পাঠালো ৷ অপেক্ষা করতে করতে সারে পাঁচটায় প্রিজনভ্যানে চোটকে দেখে বলে তুই চিন্তা করিসনে রবিবারে জামিন হয়ে যাবে ৷ প্রিজনভ্যান চলে গেল ৷ ভাই তাকিয়ে থাকল পেছন থেকে যতক্ষন দেখা গেল ৷ ব্যর্থ ভাই রিক্সা চেপে মেসে আসল ৷ গতকাল দুপুরে খেয়েছিল এখনো কিছু খায়নি একটু আধটু পানি ছাড়া ৷ প্রচন্ড ক্ষুধার্থ কিন্তু মন চায়না খেতে ৷ এমনিতে আব্বাজানের ফোন ৷ হ্যালো বাবা ছোটর কি হইছে ওর ফোনে কল ঢুকছেনা ৷ না আব্বা কিছু হয়নি একটু আগেই ওর ফোনে না পেয়ে ওর বন্ধুর ফোনে কথা বলেছি ৷ ওর ফোনটা নাকি নষ্ট হয়ে গেছে ৷ চোট ভাল আছে আপনি চিন্তা করবেননা ৷ বৃদ্ধ বাবাকে খবরটা দিতে পারলনা বড় ৷ এমনিতেই বাবার তবিয়তে খুব একটা ভালনা ৷ কান্না যেন থামছেনা ৷ ক্ষুধায় কাতর হয়ে খেতে বসল বসেই অঝোর কান্না আমি খাচ্ছি আমার ভাইকে কি ওরা খেতে দেবে? দু চার লোকমা খেয়েই হাত ধুলো ভাই ৷ পেটে খাবার ঢুকছেনা ৷ চলবে......

গল্প নয় বাস্তব সত্য 1

গল্প নয় বাস্তব সত্য 1 ============== বাঙ্গালী জাতীর সাধারন প্রবনতা ঝামেলা কঠিন না হলে মিমাংসা হয়না ৷ তাইতো আজ দেশের এমন হাল ৷ যদি আমরা মানবিকতার পরিচয় দিতে পারতাম তাহলে আজ দেশ এতোটা সংকটে পরতোনা ৷ আজ একে অপরকে মেরেই যেন শান্তি পাচ্ছে ৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সার্টিফায়েড সন্ত্রাসীতে পরিনত করেছে ৷ তারা কোন কারন ছাড়াই মারছে মানুষ ৷ নিরীহ লোকদের তুলে নিয়ে চাঁদা দাবী করছে ৷ চাঁদা না পেলে খুন করে ক্রসফায়ার বলে চালিয়ে দিচ্ছে ৷ অথবা অস্বীকার ৷ কিন্তু আমাদের দরদী প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল দায়ভার নেওয়ার ঘোষনা করেছেন ৷ ও ম্যাডাম কতটা খুনের দায়ভার আপনি নেবেন? কতটা অপকর্মের দায়ভার আপনি বইতে পারবেন ৷ হয়তো অনেক পারবেন ৷ আপনার দায়ভার বহনের ক্ষমতা অনেক ৷ কিন্তু আপনি কি সঠিকভাবে জানেন আপনি দায়ভার নেওয়ার পর তাদের অপকর্ম কতগুন বেডেছে? হয়তো হা হয়তো না ৷ কিন্তু জনগন ঠিকই জানে ৷ এমনিতেই জনগনের জান মালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগনকে হয়রানি করতে ব্যস্ত থাকে সর্বক্ষণ ৷ আবার আপনি দিয়েছেন দায়মুক্তি ৷ বছর দেরেক আগের কথা এক বড় ভাই খবর পেল তার আদরের ছোট ভাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে ৷ পাগলপ্রায় হয়ে ছুটে আসে সুদুর গ্রামের বাড়ি থেকে রাজধানী শহরে ৷ ছোট ভাইকে দেখতে রাত 11:30 যায় সংশ্লিষ্ট থানায় ৷ ছোট ভাইয়ের নাম ঠিকানা বলে দেখা করার অনুমতি চায় ৷ থানার তদন্ত কর্মকর্তা শুরু করে অচেনা একটা আঞ্চলিক ভাষায় গালাগাল ৷ ক্ষোভে কলজে ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম তবুও আদরের ছোট ভাইয়ের সাথে দেখা করে একটু সাহস দেবে ভেবে চুপ মেরে গালাগাল সহ্য করেছে ৷ বলছে স্যার একটু খাবার এনেছি ভাইটির জন্য যদি একটু অনুমতি দিতেন ভাইটাকে খেতে দিতাম ৷ উত্তর পেল তোর ভাইকে ধরে আনার সময় যে খাবার দিয়েছি অনেকদিন আর খেতে হবে না ৷ কাটা মুরগীর মত ছটপট করতে লাগলো বড় ভাইয়ের মন নাজানি কতটা মেরেছে আমার ভাইটাকে ৷ তারপর কর্মকর্তা বলে তুই কি তোর ভাইকে ছারাবি দে দেড় লাখ টাকা দে ৷ 154 দিয়ে দেব কাল কোর্টে দু হাজার খরচ করলেই জামিন হয়ে যাবে ৷ বড় ভাই পকেট মানিব্যাগ সব হাতিয়ে হাজার দশ টাকা বের করে ৷ কর্মকর্তা বলে দেড় লাখ লাগবে নাহয় তোকেও ভিতরে ঢুকাইয়া দিমু ৷ বড় ভাই কাকুতি মিনতি করে বলে স্যার গতকাল আমার বাচ্ছা হইছে মেডিকেলের বিল দিতে টাকাটা ধার করে জোগাড় করছি সেটাই নিয়া আসছি আমার ভাইরে ছাইড়া দেন ৷ তখন টিভিতে চলছিল ফুটবল খেলা গোল হল বলে দেখতো গোলটা সুন্দর হইছেনা? হ স্যার ৷ ওই তুই কোনদল করস ? স্যার বার্সা ৷ কেন ?তুই মিউনিখ করবি আমি মিউনিখ করি ৷ মিউনিখ বুঝলিতো ? হ বুঝছি ব্রায়ান মিউনিখ ৷ স্যার আমার ভাইটারে ছাইড়া দেন ৷ কইছিনা দেড় লাখ নাহয় ভাগ দুরে যাইয়া মর কাছে মরলে, ,,,, বড় ভাই ব্যর্থ চলে যাচ্ছে ওই কোথায় যাস ৷ কইছিনা তোকেও, ,,, কেটে গেল তিন ঘন্টা ৷ অবশেষে কোথায় যেন গেল সুযোগে বড় ভাই ভাগল ৷ যদি আমিও আটক হই ভাইটার কি হবে ৷ বের হয়ে কাঁদছে অঝোর ধারায় আমার ভাইটাকে জালিমের কারাগারে রেখে আসলাম আল্লাহ তুমি হেফাজত করো ৷ কখন যে রাত পেরিয়ে সকাল হল টেরই পায়নি বড় ভাই ৷ ফজরের আযান হলে নামাজে গেল ৷ নামাজ শেষে পরিচিত বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় উকিল ঠিক করলো ৷ উকিল বললো এখন আটটা বাজে নয়টার মধ্যে ওর পরিক্ষার কাগজপত্র জন্মনিবন্ধন সহ এই কার্ডের ঠিকানায় আমার অফিসে দেখা করবেন ৷ ঠিক আছে বলে রিক্সা ডেকে রিক্সায় চেপে বসল বড় ভাই ৷ বৃষ্টি ঝরছে অঝোর ধারায় সাথে ভাইয়ের চোখের জল, মিলেমিশে একাকার ৷ ভাইয়ের মনে হচেছ তার দুখে বুঝি আকাশও কাঁদছে ৷ নয়টার কিছু পর কাগজ পত্রসহ উকিলের চেম্বারে হাজির হয় ভাই ৷ এইযে সব কাগজ এনেছি জামিন হবেতো আমার ভাইয়ের? হবে হবে হাজার তিনেক টাকা দেন ৷ আর আপনি হাজতের গেইটে থাকেন দেখন ও আসে কিনা ৷ আসলে জানাবেন ৷ ঠিক আছে কাগজ পত্র ভাল মত ঠিক করেন যাতে আমার ভাইয়ের জামিন হয় ৷ ততক্ষনে কয়েকজন শুভাকাংখী চলে আসে ৷ বাকীটা পরে লিখছি, উপন্যাস নয় আমার জীবনের বাস্তবতা ৷